ঢাকা, ২০২৪-১১-২৯ | ১৪ অগ্রাহায়ণ,  ১৪৩১

রপ্তানি সাড়ে ১২ শতাংশ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা

প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ

প্রকাশিত: ০২:২৫, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। এ লক্ষ্যমাত্রা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রপ্তানির চেয়ে প্রায় ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। গত অথর্বছরে পণ্য ও সেবা থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫১.১০ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ১১০ কোটি ডলার।
গতকাল রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিচালনা পর্ষদের সভায় লক্ষ্যমাত্রার এ সিদ্ধান্ত হয়। অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ সভায় বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিমউদ্দিন, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।  

বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুলাইয়ে প্রকৃত পণ্য রপ্তানির ভিত্তিতে লেনদেনের ভারসাম্যের তথ্য প্রকাশ করে। এতে পণ্য রপ্তানির হিসাবে বড় ধরনের গরমিলের তথ্য উঠে আসে। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, ইপিবি দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানির হিসাব প্রকাশ করলেও সে অনুযায়ী দেশে আয় আসছিল না। এ নিয়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা থেকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, যে তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা হয়েছে, প্রকৃত অর্থে সে পরিমাণ রপ্তানি হয়নি।
এর পর থেকে ইপিবি পণ্য রপ্তানির হিসাব প্রকাশ করা বন্ধ রেখেছে। তবে এনবিআরের তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুন পর্যন্ত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০ দশমিক ৮১ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ কম। এ ছাড়া এ সময় সেবা রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৬ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার। এ ক্ষেত্রেও আয় কমেছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। 

অবশ্য এর আগে গত এপ্রিল পর্যন্ত ইপিবি রপ্তানির যে তথ্য প্রকাশ করে আসছিল, তাতে বেশ ভালোই প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনায় উঠে আসে, ইপিবি যে তথ্য প্রকাশ করে, তাতে বেশকিছু ক্ষেত্রে একই রপ্তানি দুবার এন্ট্রি করা হয়। এর পর থেকে ইপিবি রপ্তানির তথ্য প্রকাশ বন্ধ রেখেছে। এর পর এনবিআরের পণ্য জাহাজীকরণের তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করলে, তাতে প্রবৃদ্ধি কমে যায়।
এদিকে গতকাল পরিচালনা পর্ষদ সভায় রপ্তানি আয়ের তথ্য দিয়েছে ইপিবি। তাতে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫১ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি ৪৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন। সেবা রপ্তানি থেকে আয় ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইপিবির তথ্য গরমিল রয়েছে ৪ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। 
ইপিবি পর্ষদ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, চলতি অর্থবছরের জন্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ ধরা হচ্ছে। তিনি বলেন, এবার রপ্তানি আয় আগের থেকে কমবে না, বরং বেশি হবে। আর রপ্তানি নিয়ে কিছু তথ্যগত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহ করার যেসব ব্যবস্থা আছে, সেগুলো চালু রাখা হবে। সবার তথ্য সমন্বয় করে সত্য চিত্র প্রকাশ করা হবে। একেক দপ্তর একেক রকম তথ্য দেবে, তা হবে না। কিছুটা পার্থক্য থাকে, এটা স্বীকার করতে হবে। বড় অসংগতি
দূর করা হবে।
নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সমকালকে বলেন, বিগত দিনগুলোতে রপ্তানিকারকরা যেসব সমস্যা মোকাবিলা করেছেন, সেগুলো সমাধান করা গেলে সাড়ে ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সম্ভব। অন্যথায় সম্ভব নয়। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, ব্যাংকে এলসি খোলা সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান এবং এনবিআরের বিভিন্ন বিভাগের অসহযোগিতা দূর করতে হবে। একই সঙ্গে সম্প্রতি আশুলিয়া এলাকায় ষড়যন্ত্রকারীদের তৈরি করা অসন্তোষ দমন করতে হবে।   
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের জিএসপি সুবিধা পাওয়া সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, জিএসপি সুবিধা দেওয়ার জন্য তাদের বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা ইতিবাচক দৃষ্টি দেবে বলে আশা করেন তিনি। এ ছাড়া উপদেষ্টা জানান, আগামী বছরের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা জানুয়ারি মাসেই হবে। 

 

সর্বশেষ
জনপ্রিয়