গভীর রাতের ফোন প্রায়ই কোনো না কোনো দুঃসংবাদ নিয়ে আসে: শাহীন সামাদ
প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ
চলে গেলেন বরেণ্য সুরকার, সংগীত পরিচালক ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক সুজেয় শ্যাম। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। অসংখ্য কালজয়ী গানের এই স্রষ্টার চিরবিদায়ে স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর সংগীত সহযোদ্ধা শাহীন সামাদ
এক জীবনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, গভীর রাতের ফোন প্রায়ই কোনো না কোনো দুঃসংবাদ নিয়ে আসে। গতকাল [পরশু] রাতেও সেটা হলো। রাত তখন ৩টা, বেজে উঠল ফোন। রিসিভ করতেই কান্না জড়ানো কণ্ঠে ভেসে এলো একটি কথা– ‘বাবা আর নেই’। ফোনটা এসেছিল আমাদের সবার প্রিয় সুজেয় দা’র [প্রখ্যাত সুরকার সুজেয় শ্যাম] মেয়ে লিজার কাছ থেকে। তার একটি বাক্যই থমকে দিয়েছিল আমাকে। এরপর রাত কীভাবে কেটেছে নিজেও বলতে পারব না।
দুঃসংবাদ পাওয়ার মুহূর্ত থেকে মনের পর্দায় একে একে ভেসে উঠছে পুরোনো দিনের সব স্মৃতি। এখনও চোখে ভাসে একাত্তরের সেই দিনগুলোর ছবি, যখন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে আমরা দলবেঁধে ভিড় করেছিলাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। সদ্য তারুণ্যে পা রাখা আমার জন্য এটি ছিল এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা। আমরা ২৫ থেকে ৩০ জন শিল্পী একসঙ্গে রিহাসাল করতাম। এরপর একে একে কণ্ঠে তুলে নিতাম গানগুলো। গান যে হয়ে উঠতে পারে নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের বজ্রনিনাদ, পরাধীনতার শিকড় ছেঁড়ার বড় অস্ত্র– নতুন করে তার প্রমাণ পেয়েছি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গিয়ে। তখনকার একেকটি গান ছিল মুক্তিকামী বাঙালির বড় এক হাতিয়ার। সন্মুখযোদ্ধা থেকে শুরু করে প্রত্যেক বাঙালিকে সেই গানগুলো একটি স্বাধীন দেশের মানচিত্র ছিনিয়ে আনার শক্তি ও সাহস জুগিয়েছে। সেই গানগুলোর স্রষ্টা যারা, তাদেরই অন্যতম একজন ছিলেন সুজেয় শ্যাম। বিনয়ী, সাধাসিধে এই মানুষটার সঙ্গে পরিচয় আরও আগে, কিন্তু কখনও বুঝতে পারিনি তাঁর ভেতরে বারুদ লুকিয়ে আছে।
এ কারণেই ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, বাংলাদেশের নাম’, ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’, ‘রক্ত চাই, রক্ত চাই’, ‘আয়রে চাষি মজুর কুলি’, ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’সহ সেই সময়ে সুর করা তাঁর প্রতিটি গানই হয়ে উঠেছে কালজয়ী।
সুজেয় শ্যামের সুরে আমার গাওয়া প্রথম গান ছিল, ‘আমার ভাইয়ের, আমার বোনের রক্তে ভেজা’। এরপর আরও অনেক গান গেয়েছি তাঁর সুরে, যেগুলো স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বেতার ও টেলিভিশনে প্রচার হয়েছে। কারণ একটাই, যাদের কণ্ঠ সুজেয় দা’র ভীষণ পছন্দের ছিল, আমি সেই সৌভাগ্যবানদের একজন। সেই সুবাদে একসঙ্গে অনেক কাজ করার যেমন সুযোগ হয়েছে, তেমনি সম্পর্কটা স্নেহের ছোট বোন থেকে বন্ধুতে রূপান্তরিত হয়েছে। যাঁর স্নেহ ছায়াতলে থেকে অনবদ্য সব সৃষ্টির সঙ্গী হতে পেরেছি, সেই মানুষটি আজ নেই, এটি ভাবতেই কষ্টে বুক ভরে যাচ্ছে। বিদায় বেলায় একটিই প্রার্থনা, সৃষ্টিকর্তা তাঁকে যেন চিরশান্তিতে রাখেন।
সুজেয় শ্যামের কালজয়ী কিছু গান:
–গান-বিজয় নিশান উড়ছে ওই
–রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, বাংলাদেশের নাম
–আজ রণ সাজে বাজিয়ে বিষাণ
–মুক্তির একই পথ সংগ্রাম
–আয়রে চাষি মজুর কুলি
–রক্ত চাই, রক্ত চাই
–আহা ধন্য আমার
–ওরে আয়রে তোরা শোন
- এক জীবনে খুব বেশি চাইনি, মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি: রাইসুল ইসলাম
- বাংলাদেশে একইদিনে চঞ্চল চৌধুরীর ‘পদাতিক’
- ইলিয়াস কাঞ্চনের অর্জনে আমি বেশি খুশি: ডলি জহুর
- ১২ গান নিয়ে নওশীন মনযূর-এ-খুদা
- দীর্ঘ ট্রাফিক জ্যাম, সঙ্গে গরম—মেট্রো ধরলেন হৃতিক
- ৪০০ কোটি টাকায় বাড়ি বিক্রি করলেন ব্র্যাড পিট
- রাজের ৩ সিনেমার পোস্টার দেখে কী যে আনন্দ হয়েছিল: পরীমনি
- বাংলা একাডেমির সাম্মানিক ফেলোশিপ পাচ্ছেন তানভীর মোকাম্মেল
- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে চিত্রনায়িকা মাহিয়া ও তাঁর স্বামীর নামে পুল
- শাকিব খান একজন পাওয়ারফুল আর্টিস্ট: মিশা সওদাগর