ঢাকা, ২০২৫-০৩-১৯ | ৫ চৈত্র,  ১৪৩১

নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন ‘সরলতার প্রতিমা’র খালিদ

প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ

প্রকাশিত: ২২:১৬, ১৮ মার্চ ২০২৫  

‘সরলতার প্রতিমা’ শিরোনামের গানটি গেয়ে শিল্পী খালিদ তরুণ প্রজন্মের হৃদয়ে ঝড় তুলেছিলেন। এখনো অনেকে গুনগুন করে গানটি পরিবেশন করেন। তার কণ্ঠের ‘কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে’, ‘হয়নি যাবারও বেলা’, ‘তুমি নেই তাই’ , ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’ , ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’ গানগুলো লুফে নিয়েছিলেন শ্রোতারা। আজ (১৮ মার্চ) এমন সব জনপ্রিয় গানের শিল্পীকে হারানোর দিন। ২০২৪ সালের আজকে দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোক গমন করেন এ গায়ক।

ঢাকার গ্রিনরোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান খালিদ। বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। সেদিন খালিদ সন্ধ্যার পরে অসুস্থ বোধ করেন। সেই সময় বাড়িতে ছিলেন তিনি। বাড়ি থেকে তাকে দ্রুত রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরই হাসপাতালে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন ‘সরলতার প্রতিমা’র খালিদখালিদ। ছবি: সংগৃহীত

একসময় খালিদের গান পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন শ্রোতাদের মুখে মুখে থাকত, বাজত বিপণি-বিতানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। মৃত্যুর বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই গান থেকে দূরে ছিলেন খালিদ। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে একেবারেই গান থেকে যেন দূরে সরে যান। বেছে নেন প্রবাস জীবন। আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়ে নিউ ইয়র্কে বসবাস করতেন। তার এক ছেলে সেখানে পড়াশুনা করেন। মাঝে মাঝে দেশে আসলেও একাই থাকতেন খালিদ। নিজের গণ্ডির বাইরে খুব একটা বের হতেন না তিনি। নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন এ গায়ক। কিছুদিন থাকতেন ফের চলে যেতেন বিদেশ তিনি।

নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন ‘সরলতার প্রতিমা’র খালিদশৈশবে মায়ের সঙ্গে খালিদ। ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৫ সালের ১ আগস্ট গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন খালিদ। ১৯৮১ সাল থেকে গানের জগতে যাত্রা করেন। শুরুতে ফ্রিজিং পয়েন্ট নামের একটি ব্যান্ডে যোগ দেন এ গায়ক। ১৯৮৩ সাল থেকে চাইম ব্যান্ডে যুক্ত হন। একের পর এক হিট গান উপহার দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই এ গায়ক খ্যাতির শীর্ষে চলে যান। সারগাম থেকে প্রকাশিত চাইমের প্রথম অ্যালবাম ‘চাইম’ দিয়ে যাত্রা শুরু খালিদের। এ অ্যালবামের প্রতিটি গাই শ্রোতাপ্রিয়তা লাভ করে। ‘চাইম’ অ্যালবামটির গানগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘তুমি জানো নারে প্রিয়’, ‘কীর্তনখোলা নদীতে আমার’, ‘এক ঘরেতে বসত কইরা’, ‘ওই চোখ’, ‘প্রেম’, ‘সাতখানি মন বেজেছি আমরা’, ‘আমার জন্য রেখো’, ‘বেকারত্ব’, ‘নাতি–খাতি বেলা গেল’প্রভৃতি।

নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন ‘সরলতার প্রতিমা’র খালিদ‘চাইম’ অ্যালবামের কভার

এরপর ২০০৫ সালে চাইম ব্যান্ড ‘কীর্তনখোলা’শিরোনামে তাদের শেষ অ্যালবাম প্রকাশ করে। এর মধ্যে একক শিল্পী হিসেবে খালিদ নিজেও প্রতিষ্ঠিত হয়ে যান। ‘এক টুকরো চাঁদ’নামের তার প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশ পায়। সেইসঙ্গে বেশ কিছু মিক্সড অ্যালবামেও তিনি গান গেয়ে প্রশংসিত হন।

প্রিন্স মাহমুদের সুরে ১৯৯৪ সালে খালিদের ‘আবার দেখা হবে’গানটি সংগীতপ্রেমীদের মন ছুঁয়ে যায়। এরপর এরপর তার সুরে ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’, ‘যতটা মেঘ হলে’, ‘নীরা ক্ষমা করো’, ‘আকাশনীলা তুমি বলো কীভাবে’ গানে কণ্ঠ দেন খালিদ। ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয় খালিদের একক অ্যালবাম ‘ঘুমাও’। এটি খালিদের সংগীত জীবনের এক মাইলফলক সৃষ্টি করে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়