সৌদিকে ধর্ম উপদেষ্টার চিঠি, উড়োজাহাজ ভাড়া ফেরতের আশ্বাস
প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ

প্রতি বছর রমজান মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশি ওমরাহ করতে যান। সে অনুযায়ী এজেন্সিগুলো অগ্রিম টিকিটও বুকিং দিয়েছে। যাত্রীরাও আছেন ভিসার অপেক্ষায়। কিন্তু কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ ওমরাহ ভিসা ১০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে সৌদি সরকার। এতে বিপাকে পড়েছেন ওমরাহ যাত্রী ও এজেন্সিগুলো। অগ্রিম উড়োজাহাজ ভাড়া ফেরত পাওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
এ পরিস্থিতিতে সংকট নিরসনে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূতকে চিঠি দিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি রাষ্ট্রদূতকে ওমরাহ ভিসা ইস্যু স্বাভাবিক করার অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর সঙ্গেও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা এজেন্সিগুলোর অগ্রিম ভাড়ার অর্থ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
সৌদি কর্তৃপক্ষের ওমরাহ ভিসা ইস্যু ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা ও এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপের বিষয়টি তুলে ধরতে দু-একদিনের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে।
আলেমরা জানান, রমজান মাসে ওমরাহ পালন অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। তাই অনেকেই ওমরাহ পালনের জন্য রমজান মাস বেছে নেন। বিশেষ করে রমজানের শেষ দশ দিনে মক্কা-মদিনায় এতেকাফে বসে ইবাদত বন্দেগিতে কাটিয়ে দেন।
হজের চেয়েও বেশি মানুষ এখন মক্কা-মদিনায়। মানুষ যে এবাদত করবে সেই পরিবেশ নেই। এ পরিস্থিতিতে সৌদি সরকার ওমরাহ ভিসা ইস্যু প্রায় বাতিল করে দিয়েছে। তারা এখন ভিসা ইস্যু করছে ১০ শতাংশ।- ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্য বছরের মতো এবারও রমজানের শুরুতেই মক্কা-মদিনায় ওমরাহ যাত্রীদের ঢল নামে। এত সংখ্যক ওমরাহপালনকারীর ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খেতে হচ্ছিল সৌদি কর্তৃপক্ষকে। তাই রমজানের প্রথম সপ্তাহে (৪ মার্চ) ওমরাহ ভিসা ইস্যু একেবারে কমিয়ে দেয় সৌদি আরব।মূলত নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে ওমরাহ ভিসা বা মোফা নিতে হয়। ৪ মার্চ থেকে নুসুক সিস্টেমের মাধ্যমে মাত্রা ওমরাহ ভিসা ইস্যুর সংখ্যা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনে দেশটির সরকার। এতে রমজানে ওমরাহ করার প্রস্তুতি নেওয়া মানুষগুলো বিপাকে পড়েছেন। বিপাকে আছে এজেন্সিগুলোও। তারাও রমজানে যাত্রীর চাপ বিবেচনায় সৌদিয়া এয়ারলাইন্সসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে অগ্রিম টিকিট বুকিং দিয়ে রেখেছেন। এখন ভিসা না পাওয়ার প্রেক্ষাপটে এয়ারলাইন্সগুলো বুকিং বাতিল কিংবা যাত্রার তারিখও পরিবর্তনের সুযোগ দিচ্ছে না।
ভিসা না হওয়ায় এজেন্সি ও ওমরাহ যাত্রীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কোনো কোনো যাত্রী টাকা ফেরত নিচ্ছেন। কেউ ভিসা হবে বলে এখনো আশায় বুক বেঁধে আছেন। উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমরা আলাপ করেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তবে নিয়ম আছে, বুকিং দিলে পরে টাকা ফিরিয়ে নিলে একটা ফি কাটে। সামান্য একটা ফি কেটে টাকা ফেরত দেওয়া হবে- তারা রাজি হয়েছে।-আ ফ ম খালিদ হোসেন
এ বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন রোববার (১৬ মার্চ) জাগো নিউজকে বলেন, ‘সৌদি সরকার নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে ওমরাহ ভিসা ওপেন করে দিয়েছিল। লাখ লাখ মানুষ সৌদি আরবে হাজির। হজের চেয়েও বেশি মানুষ এখন মক্কা-মদিনায়। মানুষ যে এবাদত করবে সেই পরিবেশ নেই। এ পরিস্থিতিতে সৌদি সরকার ওমরাহ ভিসা ইস্যু প্রায় বাতিল করে দিয়েছে। তারা এখন ভিসা ইস্যু করছে ১০ শতাংশ।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘ওমরাহ ভিসা কমিয়ে দেওয়ার কারণে আমরা উদ্বিগ্ন, আমাদের উদ্বেগ তাদের (সৌদি সরকার) জানিয়েছি। আমরা গতকাল (১৫ মার্চ) সৌদি রাষ্ট্রদূতকে চিঠি দিয়েছি। ভিসা আগের মতো ওপেন করার অনুরোধ জানিয়েছি। তারা আমাদের এখনো কোনো উত্তর দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চিঠিতে বলেছি, আকস্মিকভাবে ভিসা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে আমাদের ওমরাহ যাত্রীরা উদ্বিগ্ন। তারা এজেন্সিগুলোকে টাকা দিয়েছে, এখন এজেন্সিগুলোকে টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে। কিন্তু এজেন্সিগুলো টিকিট বুকিং দিয়ে ফেলেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সৌদি সরকারকে বাংলাদেশের জন্য ওমরাহ ভিসা ইস্যু স্বাভাবিক করার অনুরোধ করেছি। আমি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ফোনেও কথাও বলবো। দেখি তারা কী সিদ্ধান্ত নেয়।’
খালিদ হোসেন বলেন, ‘উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমরা আলাপ করেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তবে নিয়ম আছে, বুকিং দিলে পরে টাকা ফিরিয়ে নিলে একটা ফি কাটে। সামান্য একটা ফি কেটে টাকা ফেরত দেওয়া হবে- তারা রাজি হয়েছে।’সৌদি সরকার হঠাৎ ওমরাহ ভিসা ইস্যু প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। এতে এজেন্সি মালিক ও ওমরাহ যাত্রীরা সমস্যায় পড়ে গেছেন। আমরা শুনেছি ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে একটি অনুরোধপত্র সৌদি রাষ্ট্রদূতকে দেওয়া হয়েছে। আরও একটি চিঠি দেওয়া হবে বলে জেনেছি। দেখা যাক কী সিদ্ধান্ত আসে।- হাব মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার
‘সৌদি সরকার যদি ঘোষণা দিয়ে ভিসা ইস্যু বন্ধ করতো তবে এজেন্সিগুলো ওমরাহ যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিতো না। কিন্তু তারা হঠাৎ করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে’ বলেন উপদেষ্টা।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল দক্ষিণ পাড়ার চানবানু (বায়তুল আমান) জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব আজিজুর রহমান কাশেমী বলেন, ‘প্রতি রমজানে আমার ওমরাহ করার নিয়ত আছে। গত বছর করেছি। এবার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি, কিন্তু ভিসা পাচ্ছি না। আল্লাহর ওপর ভরসা করে অপেক্ষায় আছি।’
এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘সৌদি সরকার হঠাৎ ওমরাহ ভিসা ইস্যু প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। এতে এজেন্সি মালিক ও ওমরাহ যাত্রীরা সমস্যায় পড়ে গেছেন। আমরা শুনেছি ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে একটি অনুরোধপত্র সৌদি রাষ্ট্রদূতকে দেওয়া হয়েছে। আরও একটি চিঠি দেওয়া হবে বলে জেনেছি। দেখা যাক কী সিদ্ধান্ত আসে। আমরাও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে, টিকিটের অগ্রিম টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে একজন এজেন্সি মালিক জানান, ১০-১২টি এয়ারলাইন্স ওমরাহ যাত্রী পরিবহন করে। রমজানে প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২শ ওমরাহ যাত্রী পরিবহন করার কথা। এরা এখন যেতে পারছেন না। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ওমরাহ যাত্রীদের সৌদি আরব যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
- `রক্তদানে বিত্ত বৈভব নয় প্রয়োজন সেবার মানসিকতা`
- প্রথমবারের মতো পালিত হচ্ছে টোটাল ফিটনেস ডে
- ১২ পয়েন্ট কাটা পড়লেই বাতিল ড্রাইভিং লাইসেন্স
- তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় শ্রমিক পাঠাতে চায় বাংলাদেশ
- মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক
- সফলতার গল্প পড়ে পাঠকেরা অনুপ্রাণিত হন
- নব্বইয়ের দশকে গ্রামে আমাদের শৈশব কৈশোরের ঈদ
- ভারতে যাওয়া কমেছে বাংলাদেশিদের
- যেসব কারণে দেশের বড় অংশজুড়ে মরুভূমির মতো আবহাওয়া
- সৈয়দ নজরুল ও আশরাফের ম্যুরালে কালি লেপনের প্রতিবাদে মানববন্ধন