‘তরুণরা খেলাধুলায় আগ্রহ হারাচ্ছে, তাদের উজ্জীবিত করা হবে’
প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ
প্রবাস নিউজ
প্রকাশিত : ০১:৩৫ এএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, দেশের তরুণরা খেলাধুলায় আগ্রহ হারাচ্ছে। সেটাকে আবার পুনরুজ্জীবিত করার জন্য আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে দিকে অবশ্যই মনযোগ দেবো। আপনারা গণমাধ্যমেও তাদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করবেন, এমন অনুরোধ থাকবে।
আজ (সোমবার) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ টাওয়ার মিলনায়তনে ক্রীড়াঙ্গনের সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে ক্রীড়া সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন তিনি।
ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন গ্রামগঞ্জে খেলাধুলার আরো ক্রেজ ছিল। এখন দেখি মাঠ খালি। আমরা ফেডারেশনের মাধ্যমে যে খেলাধুলা করি তার বাইরে বৃহৎ একটা অংশ আছে প্রান্তিক পর্যায়ে সেদিকে নজর দিতে হবে।’
মত বিনিময় অনুষ্ঠানে ক্রীড়া সাংবাদিকরা নানা বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। যেখানে উঠে এসেছে খেলাকে ব্যবহার করে এক শ্রেণীর সংগঠকের দুর্নীতিবাজ হওয়ার প্রসঙ্গ, আছে সবক্ষেত্রে রাজনীতিকরণের নেতিবাচক প্রভাবের কথা। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের পথ কি হতে পারে, কোন দিকে হাঁটলে আমাদের ক্রীড়াজগত আবার আগের অবস্থায় ফিরবে তা নিয়েও এসেছে মতামত।
ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারের জন্য সরকার সার্চ কমিটি করেছে। তাদের সুপারিশের মধ্যমেই পরিবর্তনগুলো আনা হবে। এরই মধ্যে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ক্রীড়া সংস্থাগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে এবং ৭ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠণের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সেই কমিটিতে একজন ক্রীড়া সাংবাদিক রাখার বাধ্যবাদকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে আলোচনায়। বিভিন্ন কমিটিতে ক্রীড়া সাংবাদিকদের রাখাটা স্বার্থের দ্বন্দ্ব হতে পারে। এ বিষয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা সাবেক ক্রীড়া সাংবাদিকদের গুরুত্ব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
দীর্ঘ ১৬ বছর নানা অনিয়মে চলেছে ক্রীড়াঙ্গন। এখানে যে যার মতো স্বাধীনভাবে ক্রীড়াঙ্গন ব্যবহার করেছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সম্পত্তি ক্রীড়া স্থাপনা। অথচ অনেক ফেডারেশন কর্মকর্তা এই স্থাপনা দিনের পর দিন ভাড়া দিয়ে অর্থ কামিয়েছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের স্থাপনা ভাড়ার টাকা তারাই পাচ্ছে না। অনেকে দীর্ঘদিন ফেডারেশনের চেয়ার আঁকড়ে বসে আছেন। এ সব বিষয়ই উঠেছে আলোচনায়। খেলা উম্মুক্ত জায়গা তৈরি না করে ক্রীড়া পরিষদ শুধু স্থাপনা তৈরিতেই বেশি মনযোগ দিয়েছে। দেশব্যাপী অসংখ্যা ভেন্যু থাকলেও খেলাধুলা নেই।
ক্রীড়া সংবাদিকদের মতামত শুনে সমাপনী বক্তব্যে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমি সবার বক্তব্য শুনতে পারিনি অনুষ্ঠান বিলম্বে শুরু হওয়ায়। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, যারা বক্তব্য দিয়েছেন এবং দিতে পারেননি তারা লিখিতভাবে আমাদেরকে মতামত জানান। আপনারা অনেক কিছুই বললেন, এর অনেক বিষয় আমি ইতিমধ্যে জানি। দর্শক হিসেবে জানতাম, এখন দায়িত্ব পাওয়ার পর জেনেছি। অনেক কিছু নতুন জানলাম। আমরা এরই মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। সে অনুযায়ী কাজ করছি। আমরা বিভাগ, জেলা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা বিরাজনীতিকরণের জন্য ভেঙ্গে দিয়েছি। ফেডারেশনগুলোকেও সেভাবে পুনর্গঠন করা হবে।’
ক্রীড়াঙ্গনের দুর্নীতি প্রসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছেন, ‘দুর্নীতি হয় আসলে সিন্ডিকেটের কারণে। যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয় তারা নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট তৈরি করে সেভাবেই তারা নিজেদের মতো ভাগবাটোয়ারা করে পরিচালনা করে। সিন্ডিকেট যাতে না হতে পারে সেজন্য একটা ব্যবস্থা তৈরি করা দরকার। কারণ, আমরাতো প্রতিটি উপজেলা ধরে ধরে ঠিক করতে পারবো না। সিন্ডিকেট যাতে না হাতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা হিসেবে আমরা স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক, ছাত্র প্রতিনিধি রেখেছি। ক্রীড়া সাংবাদিকদের রেখেছি। তবে আমার নির্দেশনা থাকবে যারা সাবেক ক্রীড়া সাংবাদিক তাদের প্রাধান্য দেওয়ার।’