ওয়াশিংটনে মোমেন-ব্লিংকেন বৈঠক
বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র
প্রবাস নিউজ
প্রকাশিত : ১০:১১ এএম, ১১ এপ্রিল ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:১৫ এএম, ১১ এপ্রিল ২০২৩ মঙ্গলবার
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন সোমবার বাংলাদেশ-আমেরিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে তার সরকারের এ আগ্রহের কথা জানান। এ বিষয়ে কোন দ্বিমত পোষন না করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একমত প্রকাশ করেন।
সেইসাথে তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি দন্ডপ্রাপ্ত রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি পূনরায় অনুরোধ জানান
সোমবার ১০ এপ্রিল ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ব্লিংকেনের সাথে ফলপ্রসূ বলে দাবি করা হয়েছে।
ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো জোরদার করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
এতে আরও বলা হয় গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে তাদের প্রাথমিক বক্তব্যে উভয় নেতা বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বিগত অর্ধ শতাব্দির দৃঢ় সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে আগামী ৫০ বছরের জন্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ককে বিস্তৃত, গতিশীল ও বহুমুখী উল্লেখ করে ড. মোমেন এই সম্পর্ককে আরো উন্নত, সম্প্রসারিত ও সুদৃঢ় করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসে "জয় বাংলা" দিয়ে শেষ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রেরিত উষ্ণ বার্তার জন্য ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে তারা অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব জোরদার ও বহুমুখীকরণ, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান, জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রম অধিকার, নাগরিক স্বাধীনতা এবং নির্বাচনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশে শ্রম খাত সংস্কারের চলমান এবং সম্পন্ন কাজ সম্পর্কে মিঃ ব্লিংকেনকে অবহিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের এই প্রচেষ্টাগুলিকে যথাযথভাবে মূল্যায়ণ করা হবে। মিঃ ব্লিংকেন বাংলাদেশে শ্রম পরিস্থিতির আরো উন্নতির জন্য দুই দেশের মধ্যে চলমান যৌথ কর্মকাণ্ডের অগ্রগতির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সদ্ব্যবহার করতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতকে বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।
ড. মোমেন মার্কিন সরকারকে কোভিড-১৯ অতিমারি মোকাবেলায় উদার সহায়তা এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সাহায্য অব্যাহত রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির উপর জোর দেন।
সেক্রেটারি ব্লিংকেন ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে উদারভাবে আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা আব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে প্রেরিত উষ্ণ বার্তার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেরিত একটি চিঠি হস্তান্তর করেন।
উক্ত বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, ডেপুটি চীফ অফ মিশন ফেরদৌসী শাহরিয়ার, মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা) খন্দকার মাসুদুল আলম এবং ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কাউন্সেলর ডেরেক শোলে, জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট জুলিয়েটা ভালস নয়েস, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং শ্রম বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট কারা ম্যাকডোনাল্ড, দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট আফরিন আক্তার সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন এর সাথে উপস্থিত ছিলেন।