বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দিতে ৪ শর্ত বিশ্বব্যাংকের
প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ
প্রবাস নিউজ
প্রকাশিত : ০২:৪২ এএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার
বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। তবে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালীকরণের কাজে এই অর্থ ব্যবহার করতে হবে। আর এ জন্য সংস্থাটি চারটি শর্ত বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে।
গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠককালে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এসব শর্ত বেঁধে দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিশ্বব্যাংকের প্রসপারিটি প্র্যাকটিস গ্রুপের আঞ্চলিক পরিচালক মেথিউ এ. ভারঘিস প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। সংস্থার বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেকও বৈঠকে অংশ নেন।
জানা গেছে, বৈঠকে আর্থিক খাত সংস্কার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন, ব্যাংক খাত সংস্কারে টাস্কফোর্স গঠনসহ বিভিন্ন সংস্কারের উদ্যোগের তথ্য বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা সমকালকে জানান, মোট ১০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ জন্য বিশ্বব্যাংক বেশকিছু সংস্কারের কথা বলেছে। তিনি বলেন, বেশ আগেই সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির ফ্রেমওয়ার্ক গঠনের খসড়া প্রস্তুত করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে। আর খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা পুনর্নির্ধারণ করে আন্তর্জাতিক মানের করা হয়েছে। মেয়াদি ঋণ খেলাপি হওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সময় দুই ধাপে আগামী মার্চের মধ্যে উঠে যাচ্ছে।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের ১০০ কোটি ডলারের মধ্যে নীতিনির্ভর ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ৭৫ কোটি ডলার, যা মূলত বাজেট সহায়তা। বিনিয়োগ ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ২৫ কোটি ডলার।
আগামী ডিসেম্বরে এই সহায়তা পাওয়ার আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ঋণ পেতে বাংলাদেশকে যে চার শর্ত মানতে হবে—১. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ আদায়ে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির কাঠামো তৈরি এবং কোনো ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী কে হবেন, তা নির্ধারণে নীতি প্রণয়ন করা। ২. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ফরেনসিক নিরীক্ষা করলে সেটির কার্যপরিধি কী হবে, তা নির্ধারণ করতে হবে। ৩. বাংলাদেশ ব্যাংকে বিধিবিধান বাস্তবায়নে (এনফোর্সমেন্ট) পৃথক বিভাগ গড়ে তুলতে হবে। ৪. এ ছাড়া বাকি ২৫ কোটি ডলার ঋণ মিলবে বিনিয়োগ ঋণ ও গ্যারান্টি–সুবিধা হিসেবে ব্যবহারের জন্য।
জানা গেছে, বৈঠকে বিনিয়োগ ঋণের ২৫ কোটি ডলারের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংক খাত সংস্কারে কিছু পুনর্মূলধনীকরণ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কেনাকাটা বিষয়ে কিছু প্রস্তাব ছিল। তবে কেনাকাটার কিছু বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একমত হয়নি। এ কারণে এ বিষয়ে নতুন করে আবার প্রস্তাবনা তৈরি হবে।