আপনার চেয়ে অভাবীকে আগে দান করুন, তারপর আল্লাহর কাছে চান!

প্রবাস নিউজ ডেস্ক :

প্রবাস নিউজ

প্রকাশিত : ১২:১৯ এএম, ৩ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ১২:২২ এএম, ৩ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার

আপনি বাঁচলে বাপের নাম!
“বিপদে পড়লে আগে নিজে তো উদ্ধার পেয়ে নেই; তারপরে নাহয় অন্য কারো কথা ভাবা যাবে!” অত্যন্ত ভুল দৃষ্টিভঙ্গি এটি।

সবসময় মনে রাখা উচিত যে আপনার যতই অভাব থাকুক না কেন, আপনার থেকেও অভাবী কেউ না কেউ রয়েছে।


আপনার থেকেও অভাবী কেউ না কেউ রয়েছে! (ছবিসূত্র- barta24.com)

আপনি বিপদে আছেন? বিশ্বাস করুন, আপনার থেকেও বড় বিপদে কেউ না কেউ রয়েছে! তাই বিপদে পড়লে সব ভুলে শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবলেই হবে না, সাধ্যমতো সেই সব হতভাগা মানুষের জন্যেও কিছু করতে হবে।

আশা করা যায় এই মহৎ কাজের উসিলায় পরম প্রভু আপনার চাওয়াও কবুল করবেন, আপনাকে বিপদমুক্ত করবেন।

অভাবীকে দান করলে দোয়া কবুল হয়
রোগ-শোক-বিপদ ও বালা-মুসিবত থেকে মুক্তির জন্যে প্রভুর চরণতলে নিজেদের সঁপে দেই আমরা। বিপদের মুহূর্তেই হয়ত সবচেয়ে আন্তরিকভাবে আমরা দোয়া করি।


বিপদের মুহূর্তেই বোধ হয় সবচেয়ে আন্তরিকভাবে আমরা দোয়া করি (ছবিসূত্র- mathabah.org)

বালা নিরসনে দান অত্যন্ত কার্যকরী, নিঃসন্দেহে। তবে দোয়া করা বা দোয়া চাওয়ার আগে দান করা দোয়াকে ফলপ্রসূ ও কার্যকর করে।

যে-কারণে কোয়ান্টাম হিলিংয়ের জন্যে একটি অনুদান রাখা হয়। আর হিলিংয়ের মাধ্যমে যে সংকট নিরসন ও চাওয়া পূর্ণ হয় তার দৃষ্টান্ত আছে অজস্র।

হযরত হাবীব আজমী-র একটি ঘটনা
অনেক বড় মাপের বুজুর্গ ছিলেন হযরত হাবীব আজমী।


হযরত হাবীব আজমীর সমাধী

একবার এক মা কাঁদতে কাঁদতে তার কাছে এলো। ছেলের বিচ্ছেদ তাকে শোকে পাগল করে তুলেছে।

হুজুর তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কি কিছু আছে? মহিলা বললেন, দুই দিরহাম আছে।

বুজুর্গ ঐ দুই দিরহাম নিয়ে তা গরিবের মধ্যে বিলিয়ে দিলেন। এরপর দোয়ায় বসলেন। দোয়া শেষ করে মহিলাকে বললেন, “তুমি বাসায় যাও। তোমার ছেলে ফিরে এসছে।”

মহিলা বাসায় পৌঁছে দেখলেন, সত্যি সত্যিই তার হারানো ছেলে ফিরে এসেছে!

অভাবীকে কেন দান করব?
প্রতিটি ভালো কাজ করার পেছনে একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জন। কারণ স্রষ্টা আপনার ওপর সন্তুষ্ট হলেই আপনাকে তিনি এমন কিছু দান করতে পারেন যা হয়তো আপনি কল্পনাতেও কখনো চিন্তা করেন নি! আপনি লাভ করতে পারেন অভাবনীয় সাফল্য।

আর সকল সাদাকা বা সৎকর্মের মধ্যে নিঃসন্দেহে সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছে দান।


আপনার সম্পদে তাদের হক আছে যাদের তিনি তা দেন নি 

আসলে আপনার সম্পদে তাদের হক আছে যাদের তিনি তা দেন নি। এই হক আদায়ের জন্যেই হোক, কিংবা সামর্থ্য থাকার শুকরিয়া, দান করতে হবে অভাবী-বঞ্চিত-নিঃস্বদের।

মুসলিম শরীফের একটি হাদীস
মহাবিচার দিবসে মহামহিম আল্লাহ অনুযোগ করবেন, ‘হে আদমসন্তান! আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম। তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম। কিন্তু তুমি আমাকে খাবার দাও নি।’
অভিযুক্ত তখন আরজ করবে, ‘হে মহান অন্নদাতা! তুমি যেখানে সবার অন্নের ব্যবস্থা করো, সেখানে আমি তোমাকে কীভাবে খাওয়াব?’
আল্লাহ বলবেন, ‘অমুক তোমার কাছে খাবার চেয়েছিল কিন্তু তুমি তাকে খাবার দাও নি। তুমি কি জানতে না যে, তখন যদি তুমি তাকে খাবার দিতে, তাহলে তার পুরস্কার আমার কাছ থেকে পেতে?’
অর্থাৎ, অন্নহীন ক্ষুধার্ত নিঃস্বদের দানের মধ্যেই আল্লাহ্‌ রেখেছেন মহাপুরস্কার।
দান গ্রহীতার হাতে পৌঁছানোর আগেই পৌঁছে যায় আল্লাহর হাতে!
স্রষ্টার কাছে যখন কিছু চাইবেন, তখন আপনার চেয়েও অভাবীর জন্যে কিছু দিয়ে তারপর স্রষ্টার কাছে আপনার চাওয়া পেশ করুন। আপনি তখন স্রষ্টার কাছে দাতা হয়ে যাবেন। আর দাতার হাতকেই তো তিনি বেশি পছন্দ করেন!
নবীজী (স) বলেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে দান করলে সেই সাদাকা বা দান গ্রহীতার হাতে পৌঁছার আগেই আল্লাহর কাছে পৌঁছে যায়। (তাবারানী)
কোয়ান্টাম মাটির ব্যাংকে যারা দান করেন তারা যে আল্লাহ্‌র বিশেষ রহমতের ছায়ায় থাকেন এটা তারাই বলেন। কারণ এখানে দান করা অর্থ ব্যয় করা হয় প্রকৃতই যারা সাহায্যের হকদার তাদের জন্যে।
মাটির ব্যাংকে দানের পর বিপদ আসতে আসতেও আসে নি, বা পাশ ঘেঁষে গেছে, অথবা মানত পূরণ হয়েছে অথচ ব্যাংকটি তখনও ফাউন্ডেশনে জমা দেয়াই হয় নি- এই অভিজ্ঞতার কথা অনেকেই বলেন। বিষয়টি যে কাকতালীয় নয় ওপরের হাদীসটিই তার প্রমাণ!