শাকিব খানের ছবিতে ভাগ্য ফিরেছে বিদেশি যে নায়িকাদের

প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ

প্রবাস নিউজ

প্রকাশিত : ১২:১০ এএম, ১৬ অক্টোবর ২০২৪ বুধবার

ঢাকাই সিনেমায় বিদেশি নায়িকাদের অংশগ্রহণ নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের নায়িকারা ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নিয়মিত মুখই ছিলেন। সেটা  ক্রমাগত বাড়ছে যেন। তবে যে নায়িকাদের ক্যারিয়ারে ওপারে ডুবন্ত অবস্থায় ছিল তারাও ঢালিউডে এসে জ্বলে উঠছেন নতুন করে। গেল কয়েক বছরে মিমি চক্রবর্তী ছাড়া বাকিরা দর্শকের কাছে অপরিচিতই ছিল।

শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করে দর্শকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এসে গেছে তারা, সিনেমাগুলো হয়েছে ব্লকবাস্টার হিট। আগামী মাসে ‘দরদ’ মুক্তির প্রেক্ষাপটে বলিউড অভিনেত্রী সোনাল চৌহানের অভিষেক হতে যাচ্ছে ঢাকাই সিনেমায়। উৎসব ছাড়া মুক্তি প্রতীক্ষিত এই ছবিতে আছেন কলকাতার নায়িকা পায়েল সরকারও।

কলকাতার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পাওয়ার মাত্রা কম বলেই কি তারা ঢাকামুখী হচ্ছেন, নাকি ঢাকার নির্মাতা কিংবা নায়কদের আগ্রহই ওখানকার নায়িকাদের দিকে, সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ।

২০২৩ সালের রোজার ঈদে শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। এই সিনেমায় কলকাতার টেলিভিশন অভিনেত্রী ইধিকা পাল শাকিবের সঙ্গে অভিনয় করেন। এর আগে ‘অন্তরাত্মা’ চলচ্চিত্রে দর্শনা বণিক ছিলেন শাকিবের নায়িকা। যদিও ছবিটি মুক্তি পায়নি। ২০২৪ সালে রোজার ঈদে মুক্তি পায় ‘রাজকুমার’। এতে শাকিব খানের বিপরীতে ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন তারকা কোর্টনি কফি। একই বছর কোরবানির ঈদে মুক্তি পায় ‘তুফান’। এতে শাকিবের বিপরীতে ছিলেন কলকাতার মিমি চক্রবর্তী। 

স্বস্তিকা মুখার্জিও ১৩ বছর আগে এফআই মানিকের ‘সবার উপরে মা’ নামে একটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন শাকিব খানের সঙ্গে। গত ঈদে শাকিবের সঙ্গে মিমি চক্রবর্তী অভিনয় করেছেন ‘তুফান’ ছবিতে। 

নির্মাতা রায়হান রাফি সমকালকে বলেন, ‘আমি চেষ্টা করি দেশি তারকাদের নিয়ে কাজ করতে। একটি বাদে আমার প্রত্যেকটি ছবিতে দেশি নায়িকা ছিল। গত ঈদে শাকিব ভাইকে নিয়ে আমার ‘তুফান’ সিনেমায় কলকাতার মিমি চক্রবর্তী ছিল। গল্পের প্রয়োজনে আমার যে আর্টিস্ট প্রয়োজন, তাকেই আমি কাস্ট করি। এখনও দেশ-বিদেশ বলে কোনো কথা থাকার কথা না।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নির্মাতা বলেন, এর কারণ হিসেবে বেশ কয়েক ধরনের কথা প্রচলিত রয়েছে। বাংলাদেশের নায়িকারা শুটিং সেটে নানা রকম ঝামেলা করেন, নানা রকম বায়না রাখেন, আবার শিডিউল ফাঁসিয়ে দেন। ফলে কলকাতা থেকে নায়িকারা এসে টাইম টু টাইম কাজ করে চলে যান, কোনো ঝামেলা নেই।

তাঁর কথায়, প্রথমত, বাংলাদেশে নায়িকা সংকট। আর বাংলাদেশি নায়িকারা অধিকাংশই ব্যক্তিগত ঝামেলায় জড়িয়ে গেছেন। বিচ্ছেদ, মামলা, টাইমিং সমস্যা রয়েছে।এসব কারণে নির্মাতারা ঝামেলামুক্তভাবে শুটিং শেষ করতে ভারতীয় নায়িকাদের নিয়ে আসছেন। বাংলাদেশে বিদেশি শিল্পীদের আনাগোনা বেশ আগে থেকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই স্রোতটা বেশি।

বিদেশি নায়িকাদের দেশের সিনেমাতে আসার কথা বলতে গিয়ে গুণী নির্মাতা কাজী হয়াৎ বলেন, ‘বাংলাদেশে তিন ধরনের সিনেমা হচ্ছে। প্রথমত, এফডিসিকেন্দ্রিক বাণিজ্যিক সিনেমা, দ্বিতীয়ত, শাকিবকেদ্রিক সিনেমা, আর তৃতীয়ত, নায়ক-নায়িকা প্রযোজককেন্দ্রিক সিনিমো। এই তিনটির মধ্যে শাকিব খানের সিনেমাগুলোতে বিদেশি নায়িকা থাকছে। কারণ, শাকিব একশ’তে একশ। ২৫ বছর পরিশ্রম করে এই জায়গা তাঁকে তৈরি করতে হয়েছে। তাঁর চাহিদা অনুযায়ী নায়িকা নির্বাচন করতে হচ্ছে। তিনি যদি বিদেশি নায়িকা নিয়ে ছবি করেন, এখানে দোষের কিছু নেই।’

শাকিব খান ছাড়াও অন্য বেশ কয়েকজন নায়কদের বেলাতেও বিদেশি নায়িকাকে দেখা যাচ্ছে। যদিও সে ছবিগুলো ততটা আলোচিত হচ্ছে না। কেবল শাকিব খানের বিপরীতে হলেই আলোচনায় চলে আসছেন নায়িকারা।