সংখ্যালঘু নিযার্তন নিয়ে ভুল তথ্যের প্রতিবাদ জানাল ইউবিইউআই
প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ
প্রবাস নিউজ
প্রকাশিত : ০২:০৫ এএম, ১০ নভেম্বর ২০২৪ রোববার
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউএস বাংলাদেশ ইউনিটি ইনিশিয়েটিভ (ইউবিইউআই)। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশি আমেরিকান সংগঠনটি।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ইনসেটে বাংলাদেশকে নিয়ে তার এক্স পোস্ট)।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর বিষয়ে বাংলাদেশি আমেরিকান সম্প্রদায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে কোনো প্রমাণ ছাড়াই বাংলাদেশে একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বড় ধরনের হামলা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের দাবি করা হচ্ছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে যখন যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মাধ্যমে এই ধরনের তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে তখন লাখ লাখ আমেরিকানের কাছে এটি পৌঁছে যায়, যা বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র নয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশি আমেরিকান হিসেবে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকারের অবস্থা সঠিকভাবে এবং সততার সাথে তুলে ধরা প্রয়োজন বলে মনে করছি। আর এর মাধ্যমে আমরা দুই দেশের মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা এবং ঐক্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর স্বাভাবিকভাবেই সঠিক তথ্য তুলে ধরা প্রযোজন। ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একটি গোষ্ঠী প্রচার চালাচ্ছে যে, সংখ্যালঘু এবং বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আক্রমণ ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে কিছু ঘটনা রাজনৈতিক কারণে টার্গেট করা হলেও এ নিয়ে ব্যাপকভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
ইউবিইউআই জানিয়েছে, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ও পর থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যেসব হামলা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানাই। কিন্তু ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ভুল তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট তাদেরই অপচেষ্টার একটি অংশ। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলে ওঠে এসেছে। এরই মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশি আমেরিকান সম্প্রদায় প্রতিটি ঘটনার স্বাধীনভাবে তদন্তের জন্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে দেশের মানবাধিকার সমুন্নত, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী এবং সামাজিক সম্প্রীতি বাড়াতে তিনি ভূমিকা রাখবেন বলে আমরা মনে করি। এছাড়া বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ মানবাধিকার সম্পর্কে বেশ সচেতন। বাংলাদেশে এখন রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত বাংলাদেশ নিয়ে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে মন্তব্য করা। সংখ্যালঘু বিরোধী ব্যাপক প্রচারণা এবং হিন্দু নিপীড়নের ভিত্তিহীন অভিযোগ সমগ্র জাতিকে কলঙ্কিত করেছে।
এতে বলা হয়েছে, যেকোনো তথ্য প্রকাশ করার আগে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তাসহ সবাইকে বস্তুনিষ্ঠ সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়ার আহ্বান জানাই। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সাফল্য আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও মার্কিন স্বার্থের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জন্য ভুল তথ্য ছড়ানোর পরিবর্তে সত্য ঘটনাকে প্রকাশ করে আমরা এই গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তান করতে পারি।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র চার দিন আগে ৩১ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলে বিবৃতি দেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।