‘মাশরাফিকে দেখে স্বপ্ন ছিলো ক্রিকেটার হবো, হয়েছি ভারোত্তোলক’
প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ
প্রবাস নিউজ
প্রকাশিত : ১১:২১ পিএম, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে দেখেই ব্যাট-বল হাতে নিয়েছিলেন আশিকুর রহমান তাজ। নিজ জেলার তারকার মতো হতে চেয়েছিলেন ক্রিকেটার। তবে ভাগ্য তাকে ক্রিকেট থেকে ঘুরিয়ে এনেছেন ভারোত্তোলনে। নড়াইলের ২৩ বছর বয়সী তাজ এখন দেশের সেরা ভারোত্তোলক।
মঙ্গলবার শেষ হওয়া সপ্তম আন্তঃসার্ভিস জাতীয় ভারোত্তোলনে নিজ ইভেন্ট ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্বর্ণ জিতেছেন এবং পুরুষ বিভাগের সেরা ভারোত্তোলক হয়েছেন।
প্রতিযোগিতা শেষে নিজের ক্যারিয়ার ও আগামী দিনের লক্ষ্য নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য জেতা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই ভারোত্তোলক।
নিজের ইভেন্টে স্বর্ণ জয়ের পাশাপাশি সপ্তম আন্তঃসার্ভিস জাতীয় ভারোত্তোলনে সেরার পুরস্কার পেয়েছেন। এমন সাফল্যের পর আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
আশিকুর রহমান তাজ: আন্তঃসার্ভিসে আমি চতুর্থবারের মতো অংশ নিলাম। আগের তিনবারই স্বর্ণ জিতেছিলাম এবং দুইবার সেরা ভারোত্তোলকের পুরস্কার পেয়েছি। আমি অনেক খুশি। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।
ভারোত্তোলনে কীভাবে এলেন?
আশিকুর রহমান তাজ: আসলে ছোট সময় থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। আমাদের জেলার মাশরাফি ভাইকে দেখেই ক্রিকেট খেলার জন্য ব্যাট-বল হাতে তুলে নিয়েছিলাম। তবে হঠাৎ করেই আমি ভারোত্তোলনের সাথে জড়িয়ে যাই।
সেই গল্পটা যদি ছোট্ট করে বলেন।
আশিকুর রহমান তাজ: আমি তখন সময় পেলেই ক্রিকেট খেলতে নেমে পড়তাম। ২০১৬ সালে আমাদের নড়াইলে ভারোত্তোলনের প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি হয়েছিল। আমি অংশ নিয়েছিলাম। আমাদের নড়াইলের ভারোত্তোলন কোচ শরীফ আলমগীর স্যার আমাকে পছন্দ করে ট্রেনিং দেওয়া শুরু করেন। ভারোত্তোলন আমার ভালোই লাগছিল। তারপর ক্রিকেট খেলা ও অনুশীলন বন্ধ করে দেই।
জাতীয় পর্যায়ে কবে থেকে খেলা শুরু করেন এবং এ পর্যন্ত আপনার অর্জন কী?
আশিকুর রহমান তাজ: ২০১৭ সালে নড়াইল জেলার হয়ে আমি ৩৫তম জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে স্বর্ণ জিতেছিলাম। পরের বছর যুব বাংলাদেশ গেমসে খেলেও পেয়েছিলাম স্বর্ণ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি পাওয়ার পর থেকে এই প্রতিষ্ঠানের হয়ে খেলে আসছি। আমি ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় এ পর্যন্ত ১০টি স্বর্ণ জিতেছি। তিনবার সেরা খেলোয়াড় হয়েছি।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় কোনো সাফল্য আছে?
আশিকুর রহমান তাজ: ২০২২ সালে বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমসে আমি চতুর্থ হয়েছিলাম। ১৯২৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে পেয়েছিলাম রৌপ্য পেয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এটাই আমার অর্জন।
আপনার পরিবারের অন্য কেউ খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত?
আশিকুর রহমান তাজ: আমরা দুই ভাই এক বোন। আমি সবার বড়। বাবা নড়াইল মাইজপাড়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক। মা গৃহিনী। ছোট ভাই ও বোন পড়াশুনা করে। আমার পরিবারের আর কেউ খেলার সাথে নেই।
ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় ধারাবাহিক সাফল্যের পর এখন আপনার লক্ষ্য কী?
আশিকুর রহমান তাজ: আমি এখনো এসএ (সাউথ এশিয়ান) গেমসে অংশ নেইনি। যদি আগামী গেমসে জাতীয় দলে সুযোগ পাই, তাহলে চেষ্টা থাকবে স্বর্ণ পদক জয়ের। আমার বিশ্বাস টানা ট্রেনিংয়ের সুযোগ পেলে এসএ গেমসে স্বর্ণ জিততে পারবো।
ভারোত্তোলক হওয়া এবং ঘরোয়া আসরে সাফল্যের পেছনে কার অবদানকে বড় করে দেখছেন?
আশিকুর রহমান তাজ: আমি প্রথমেই বলেছি শরীফ আলমগীর স্যারের কথা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর তিনজন কোচ আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। তারা হলেন-হামিদুল ইসলাম, একরামুল হক ও শাহরিয়া সুলতানা সূচি। এই চার কোচের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছেও আমি কৃতজ্ঞ।