সিরিজ বাঁচানোর টেস্টে কেমন হতে পারে বাংলাদেশের একাদশ
প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ
প্রবাস নিউজ
প্রকাশিত : ০৩:০৬ এএম, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ শনিবার
অ্যান্টিগায় করুণ পরিনতির পর কেটে গেছে ৭২ ঘণ্টা। এবার দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর সময় ঘনিয়ে এলো। আগামীকাল শনিবার (৩০ নভেম্বর) শুরু বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্ট।
বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় জ্যামাইকার কিংসটনে সিরিজ বাঁচানোর লক্ষ্যে মাঠে নামবে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। অন্যদিকে ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য বাংলাদেশের বিপরীত।
প্রথম টেস্ট বড় ব্যবধানে জিতে সিরিজে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিংসটন টেস্টে বাংলাদেশ জিতলে সিরিজ ১-১ এ অমীমাংসিত থাকবে। হারলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই হতে হবে মিরাজের দলকে।
প্রথম ম্যাচে ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে জ্যামাইকায় কী জয়ের মুখ দেখবে বাংলাদেশ, নাকি সর্বশেষ ৫ টেস্টের মতোই পরিনতি হবে, সেটাই দেখার।
পরিসংখ্যান কিংবা সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্স, কোনটাতেই আশার আলো নেই বাংলাদেশের।
টেস্টে বাংলাদেশের শেষ জয় গেল আগস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে। এরপর ভারত সিরিজে ২-০ তে হারে বাংলাদেশ। চেন্নাই ও কানপুরে দুই টেস্ট খেলে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও একই ব্যবধানে ধবলধোলাই হয় টাইগাররা। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে অ্যান্টিগায় সর্বশেষ টেস্টে হারে ২০১ রানে।
পাকিস্তান সিরিজ বাদ দিয়ে বাংলাদেশ দল এ বছর খারাপ খেলার একটা স্ট্যান্ডার্ড সেট করে ফেলেছে। তা হলো- বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রথম ইনিংসে দেড়শোর আশপাশে ইনিংস শেষ করা। মানে ১৩০ থেকে ১৭০ রানের ঘরে অলআউট হওয়া। বাকি ইনিংসে হয়তো ১০০ রান বেশি করে আড়াইশো পেরিয়ে ৩০০ রানের কাছাকাছি থাকা।
কিন্তু অ্যান্টিগা টেস্টে হয়েছে তার বিপরীত। সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে আড়াইশো পেরিয়ে (২৬৯) গেলেও পরের ইনিংসে ১২৯ রানে মুখ থুবড়ে পড়ে মিরাজের দল। আগে বা পরে হোক, এক ইনিংসে দেড়শোর নিচে ইনিংস শেষের রেকর্ডটি ঠিকই আছে।
আগামীকাল জ্যামাইকার কিংসটনে যে মাঠে খেলতে নামবে টাইগাররা, সেখানেও অতীত রেকর্ডও ভালো না বাংলাদেশের।
ইতিহাস জানাচ্ছে, ২০১৮ সালে এই মাঠে সর্বশেষ ক্যারিবীয়দের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে সেই ম্যাচে ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১৬৬ রানে হেরেছিল টাইগাররা।
শুধু দেড়শো রানের বড় ব্যবধানে হারই নয়, খেলার স্কোরলাইনও ছিল খারাপ। দুই ইনিংসেই ব্যর্থতার ঘানি টেনেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। প্রায় সবাই ব্যর্থতাল ষোলকলা পূর্ণ করে রান খরায় ভুগছিলেন। এক ইনিংসেও বাংলাদেশের স্কোরলাইন বড় হয়নি, ১৪৯ ও ১৬৮। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের স্কোর ছিল ৩৫৪ ও ১২৯।
ছয় বছর আগের ওই টেস্ট কোনোরকম আশার আলো না দেখালেও অন্তত একটা বার্তা দিচ্ছে। তা হলো- সেই ম্যাচে ছিল স্পিনারদের দৌরাত্ম। বাংলাদেশ হারলেও দুই স্পিনার সাকিব ও মিরাজ দুজনই বল হাতে ছিলেন সফল। একেক ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট পেয়েছিলেন তারা।
বর্তমান অধিনায়ক সিরাজ প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করেছেন ৯২ রান দিয়ে। বাঁহাতি স্পিনার সাকিব দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট দখল করেন ৩৩ রানে।
বাংলাদেশ খেলতে নেমেছিল ৫ স্পেশালিস্ট বোলার নিয়ে। যার মধ্যে ছিলেন ৩ স্পিনার; বাঁহাতি সাকিব, অফস্পিনার মিরাজ ও আরেক বাঁহাতি তাইজুল ইসলাম। সঙ্গে দুই পেসার আবু জাইদ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি।
ডানহাতি পেসার জাইদ প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট (১৮-৭-৩৮-৩ ) পেলেও কামরুল ইসলাম রাব্বি দুই ইনিংসে ১৩ ওভার বল করে একটি উইকেটও পাননি। অপর স্পিনার তাইজুলের ঝুলিতে জমা পড়ে ৩ উইকেট।
ছয় বছর খুব লম্বা সময় না হলেও একদম কমও না। এ সময়ে ক্যারিবীয় সাগরে অনেক জল গড়িয়েছে। তারপরও ধরে নেওয়া যায়, জ্যামাইকার কিংসটনের উইকেট এখনও স্পিনারদের পক্ষে থাকতে পারে।
সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ হয়তো এক পেসার কমিয়ে তাইজুল ও মিরাজের সঙ্গে হাসান মুরাদকে খেলানোর চিন্তা করতে পারে। তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদের একজনকে বাইরে নিয়ে বাংলাদেশ যদি থার্ড স্পিনার হিসেবে হাসান মুরাদকে খেলায় তাতে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।