মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড বাধ্যতামূলক
প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ
প্রবাস নিউজ
প্রকাশিত : ০১:৩১ এএম, ৮ মার্চ ২০২৫ শনিবার

মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মীদের ভবিষ্যত তহবিল এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ) বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দেওয়ান রাকায়াত (সংসদ) সরকার ও বিরোধীদলের আট সংসদ সদস্যের আলোচনার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে এটি অনুমোদিত হয়েছে।
দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা বারনামা জানিয়েছে, নতুন সংশোধনীতে ১১ ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। যার মধ্যে বিদেশি কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক ইপিএফ পরিশোধের দায়বদ্ধতা এবং ইপিএফের হার সংক্রান্ত বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সরকার আশা করছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে ভারসাম্য তৈরি হবে। পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিদেশি কর্মীদের জন্য ইপিএফ বাধ্যতামূলক করার ফলে দীর্ঘমেয়াদে তাদের ওপর নির্ভরতা কমবে এবং স্থানীয় ব্যবসাগুলোর প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। এটি স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রবণতাও বাড়িয়ে তুলবে।
দেশটির অর্থমন্ত্রী আমির হামজাহ আজিজান বলেন, বিদেশি কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক ইপিএফ চালুর ফলে মালয়েশিয়ার বেতন কাঠামো উন্নত হবে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এই ব্যবস্থার ফলে পরিবারের ব্যয় সক্ষমতা বাড়বে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে। এছাড়া, এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এক উদ্যোগ।
এক গবেষণাপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, যদি বিদেশি কর্মীদের জন্য ইপিএফ বাধ্যতামূলক না করা হয়, তবে তাদের নিয়োগ করা স্থানীয় কর্মীদের তুলনায় অনেক সস্তা হয়ে যাবে। ফলে শ্রমবাজারে ভারসাম্য নষ্ট হবে এবং স্থানীয় কর্মীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাবে। এছাড়া, নতুন এই ব্যবস্থা অবৈধ বিদেশি কর্মীদের সংখ্যা কমাতেও সাহায্য করবে। কারণ শুধুমাত্র বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত এবং নথিভুক্ত কর্মীরাই ইপিএফে চাঁদা দিতে পারবে।
এ বিষয়ে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, বর্তমানে বিদেশি কর্মীদের জন্য ইপিএফ তহবিলে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে অর্থ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তারা তাদের মাসিক বেতনের ১১ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ জমা দিতে পারেন, তবে নিয়োগকর্তার জন্য চাঁদার হার মাত্র ৫ রিঙ্গিত নির্ধারণ করা হয়েছে।অর্থমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় ২৫ লাখ বিদেশি কর্মীর মধ্যে মাত্র ২২ হাজার ৬৩৫ জন সক্রিয়ভাবে ইপিএফ প্রদান করেছে। যা মোট কর্মীর মাত্র শুন্য দশমিক ৯ শতাংশ।
নতুন বিধান কার্যকর হলে বিদেশি কর্মীদের জন্য ইপিএফ বাধ্যতামূলক হবে। এটি ২০২৫ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বাস্তবায়ন করা হবে। সরকার গত ৩ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করেছে, বিদেশি কর্মীদের জন্য ইপিএফ চাঁদার হার কর্মী ও নিয়োগকর্তার জন্য ২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এটি মালয়েশিয়ান কর্মী ও স্থায়ীদের তুলনায় অনেক কম।